সোনা বৌউ
স্বামীঃ- এই সোনা শুনছ?
স্ত্রীঃ- না শুনছি না।
স্বামীঃ- তাহলে কথা বলছ কীভাবে হিম্মম?
স্ত্রীঃ- চুপ করবে? এই মধ্যরাতে তোমার কীসের এতো ডাকাডাকি? হিম্মম?
স্বামীঃ- না মানে ঘুম আসছিলো না তো তাই ।
স্ত্রীঃ- তো আমি কী করব ? তোমাকে ঘুম পারিয়ে দিব ?
স্বামীঃ- না তাই কি বলেছি নাকি ?
স্ত্রীঃ- চুপ একদম চুপ কোন কথা না।
স্বামীঃ- এই সোনা , ও পরি বৌউ মাফ করে দেওয়া যায় না?
স্ত্রীঃ- হুহ,,,,ঢঙ দেখো । সন্ধেবেলা তো যাকে দেখছিলে তাকেই পরি বলছিলে । এখন আবার আমাকে বলা হচ্ছে । অসহ্য!!!
[এই আমার রাগী বউ।
শুধু রাগী না প্রচুর রাগী। এই দেখেন না কেমন রেগে আছে।এই রাগ ভাঙ্গানো ও দুঃসাধ্য । এই সন্ধেবেলা ওকে নিয়ে গিয়েছিলাম শপিংয়ে ।
সেখানে গিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম । কতপুরুষ রমণীর আনাগোনা । তাই দেখছিলাম । ও বলেছিলো এমন ভাবে মেয়েদের দিকে তাকাও কেনো?
আমি প্রতিউত্তরে বলি-দেখছনা কত পরি,পরি তো দেখার জন্যই। এই হচ্ছে আমার দোষ।কেন এটা বললাম??
একটা শারি কিনেছিলো তাও আমার হাতে দিয়ে চলে আসছিলো শপিং মল থেকে। কথা ছিলো ডিনার বাইরে করব। কিন্তু কিছুই হলো না। আমিই একটা নষ্টের
গোড়া।কি দরকার ছিলো ওকে ক্ষেপানোর। ও কত প্লানিং করেছিলো, সব মাটি। রাগ করে আমার বাইক এও ওঠে নি। রিক্সা নিয়ে একা একা বাসায় এসেছে আর
আমি পিছন পিছন। কতবার সরি বলেছি কিছুই কাজে দেয় নি। বাসায় এসে রান্না ও করেনি রাগে। না খেয়ে শুয়ে পড়েছে। আমিও পাশে শুয়ে পরেছি।
কিন্তু কথা বলে না। অনেক্ষন ডাকার পর এই উত্তরটা দিলো—না শুনছি না।]
স্বামীঃ- আরে ও টা তো তোমাকে রাগানোর জন্য বলেছি ।
স্ত্রীঃ- সে জন্যই তো রেগেছি।
স্বামীঃ- এ্যা……(তাই তো!!!! ওকে আমি রাগিয়েছি তাই ও রেগেছে।কী লজিক রে বাবা।এ মেয়ের সাথে পারা যায় না।) আরে বাবা অন্যের বউ রাগলে স্বামীকে
আরও বেশি আদর করে।আর তুমি?
স্ত্রীঃ- আর আমি যে তোমার বউ!! (ওর কথা আর মাথায় ঢুকবে না।এখন আমি যা বলব তারই চটপটে উত্তর দিবে ও।)
স্বামীঃ- আচ্ছা বাদ দাও!! আমার খিদা লাগছে?
স্ত্রীঃ- যাও পরিগুলার কাছে যাও।ওরা আদর করে খাইয়ে দিবে।
স্বামীঃ- এই এই দিকে আসো না!! (ওকে কাছে টেনে নিলাম)
শরীরটা ঝটকানি দিলো ঠিকই কিন্তু নিজেকে সরিয়ে নিলো না। আমি জানি—এতক্ষণ ওকে জরিয়ে ধরিনি বলে ওর ঘুম আসছিল না।
আমাকে ছাড়া ঘুমাতে পারবেনা তো আবার রাগ দেখাও কেন?
স্ত্রীঃ- জড়িয়ে ধরতে দিয়েছি বলে ভেবো না পার পেয়ে যাবে!! শুধু অভ্যাস হয়ছে তো, তা না হলে তোমাকে ছাড়াই ঘুমাতে পারতাম,,হুহ।। (গলার কণ্ঠ নরম হয়ে গেছে)
স্বামীঃ- আচ্ছা পরিটা এতো রেগে ছিলো কেনো ?
স্ত্রীঃ- জানোনা পরিটা নিজের প্রশংসা ছাড়া অন্য কারো প্রশংসা ওর পাগলটার মুখে শুনতে চায় না।
স্বামীঃ- পাগলটা দেখি বড্ড বেশি ভুল করেছে!!
স্ত্রীঃ- হুম্ম বড্ড না আরো ও বেশি ভুল করেছে। (অভিমানী কণ্ঠে)
স্বামীঃ- পাগলটা কীভাবে ক্ষমা পাবে?
স্ত্রীঃ- এখন পরিটাকে আরও জোরে জড়িয়ে ধরতে হবে।তবেই পরিটা পাগল্টাকে মাফ করবে। (কী করব, আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম ওকে।) কিছুক্ষন পর—-
স্বামীঃ- এই আমার যে ক্ষিদে পেয়েছে??
স্ত্রীঃ- কিছুই খেতে দিব না। এটা আমাকে রাগানোর ফল।
স্বামীঃ- তোমার খিদে লাগে নি?
স্ত্রীঃ- আমার অতো খিদে লাগে নি। আমি বিকেলে নাস্তা করেছি।
স্বামীঃ- তাহলে আমার কি হবে??
স্ত্রীঃ – একটা পাপ্পি খেতে দিব,তবে আর কিছু দিতে পারব না।
স্বামীঃ- উম্মাহ,,উম্মাহ,,উম্মাহ,লাগবেনা আর কিছু।এতেই পেট ভরবে।
স্ত্রীঃ- এই তোমাকে না বললাম একটা খেতে??
স্বামীঃ- কাল সকাল,কাল দুপুরও না খেয়ে থাকব।
স্ত্রীঃ- তাই বুঝি? সত্যি সত্যি খাবার বন্ধ করে দিব।
স্বামীঃ- এইনা না,,,,এমনি বলেছি। আমার তো এখনই প্রচুর খিদে লাগছে।
স্ত্রীঃ- আমাকে জোরে জড়িয়ে ধরে ঘুমাও। খিদে লাগবে না। কাল সকালে খাব একসাথে । তোমাকে কিন্তু কাল অফিসে যেতে দিব না কেমন।
স্বামীঃ- ওকে বাবা । আর কিছু বলিনি। শুধু বউটাকেএবার বুকে নিলাম।না আর খিদে লাগছে না।
পেটটা কেমন অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমে ভরে গেলো। ———{updated -2019}
********************Next Story****************
Nc,,,,story